গোলাপ গ্রাম ভ্রমন

 আপনাদেরকে তো জানানোই হলোনা,  অবশেষে যাওয়া হলো গোলাপ গ্রাম...।  চলুন আজকে শুনাবো গোলাপ গ্রামের কাহিনী। 



আমাদের শুরুতেই প্লান ছিলো আমরা এই ট্যুর এ পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করবো। এবং তাই করেছি। আমরা শুরু করেছিলাম ক্ষিলখেত থেকে। এখান থেকে বিকাশ পরিবহনে গিয়েছি ধউর বেরিভাদ।  ধউর থেকে আমাদের যেতে হবে বিরুলিয়া ব্রিজ। কিন্তু ওখান থেকে বাসে উঠতেই পাচ্ছিলাম না। আমাদের উঠতে হবে মিরপুরগামী বাসে। অবশেষে আলিফ পরিবহনে উঠলাম, কিন্তু কোন বসার যায়গা নাই মানুষ চাপাচাপি করে দাঁড়ায় আছে। এই অবস্থায় নিজের সংগীকে সুরক্ষা প্রদান করাই মেইন কাজ। তবে আশার ব্যাপার হচ্ছে যাইতে কম সময় লাগে। আমরাও ১০মিনিট এর মাথায় নেমে গেলাম বিরুলিয়া ব্রিজ। টাকা পয়সার হিসাবগুলো একেবারে পোস্ট এর নিচে বিস্তারিত দিয়ে দিব।

যাই হোক বিরুলিয়া ব্রিজ একটা সুন্দর যায়গা, বিকালের দিকে গেলে এখানেও একটু সময় কাটাতে পারেন। তবে গাড়ি চলাচল করায় এখানে সবসময় বালি উড়ে। 


আমরা বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে একদম গোলাপ গ্রাম পর্যন্ত   একটা অটো রিক্সা নিলাম। যেতে সময় লাগলো প্রায় আধা ঘন্টা। আমরা গিয়ে পোছালাম বিকাল ৪-৪০ এ। 


কি দেখলাম..? 

আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমার প্রথম উত্তর হবে অনেক ধুলাবালি আর মানুষ। 

তারপর দেখলাম ফুল এবং কিছু গোলাপের ক্ষেত। ওইখানে কোন একটা ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি রাস্তা নির্মাণ করতেছে।  সেটার জন্য শব্দ দুষন এবং বায়ু দুষন দুটোই হচ্ছিলো। এবং যায়গার পরিধির তুলনায় মানুষ অনেক বেশী। ফুল এবং ফুল ক্ষেত ই শুধু দেখবেন, ঘুরাফিরা বা একটু গ্রাম্য পরিবেশ নিরবে  উপভোগ করবেন তার কোন উপায় নেই।

আপনি যদি ক্ষেতে নেমে গোলাপের সাথে ছবি তুলতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আগে ফুল কিনতে হবে, ফুল কিনলেই আপনি ভিতরে গিয়ে ছবি তুলতে পারবেন।

আপনি যদি ভেবে থাকেন ক্ষেত থেকে ফুল কিনব কমদামে তাহলে ভুল। লাল গোলাপ প্রতি পিস ৫টাকা আর পিংক / সাদা গোলাপ প্রতি পিস ১০ টাকা।

তবে আমি বলবো ফেরার সময় কিছু সবজি কিনে নিয়ে আসবেন।

কিছু খাবারের দোকান আছে, কিন্তু এত ধুলাবালি দেখে আর ট্রায় করতে ইচ্ছে করেনি।

আর একটা কথা না বললেই নয় সেটা হলো মোটরসাইকেল এর উৎপাত।  ইদানীং এই সমস্যাটা বেরেই চলছে।

যাক এবার ফেরার পালা। আবারও অটো রিক্সা নিয়ে সরাসরি বিরুলিয়া ব্রিজ।

ব্রিজের এখানে কিছু খাবারের দোকান আছে। এখানে একটা জিনিস টেস্ট করলাম সেটা হলো মটকা চা। এর আগে দুজনের কেউ ই এই চা পান করিনি। বানানোর প্রক্রিয়া দেখে ভেবেছিলাম খুব টেস্ট হবে, কিন্তু ততটা ভালো লাগেনি,  দাম -৪০ টাকা।

ওইখানে একটা মুরি পেয়াজুর দোকান আছে,  দুইটা পেয়াজু অতিরিক্ত দিয়ে ২০টাকার একটা মুরি বানিয়ে খাবেন, আশাকরি আপনার পয়সা বিফলে যাবে না.. ☺️।


যাক এবার ফেরার পালা। আবারো সেই বাসে উঠা নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হলো। এবার উঠলাম শতাব্দী পরিবহনে, উদ্দেশ্য আব্দুল্লাহপুর গিয়ে নামবো কিন্তু জ্যাম এর ভয়ে নেমে গেলাম স্লুইসগেট।  এখান থেকে রিক্সা নিয়ে গেলাম ১১ নাম্বার চৌরাস্তা। সেখান থেকে রাইদা পরিবহনে উঠে চলে আসলাম ক্ষিলখেত। আর এর সাথেই সমাপ্ত হলো গোলাপ গ্রাম ভ্রমন কাহিনীর।


খরচঃ- 

যাওয়া 

ক্ষিলখেত থেকে ধউর - ২০×২=৪০

ধউর থেকে বিরুলিয়া - ২০×২= ৪০ ( মুলত ভাড়া ১০টাকা করে কিন্তু আলিফ এ উঠলে ২০টাকা)

বিরুলিয়া থেকে গোলাপ গ্রাম - ৯০ টাকা

ফেরাঃ

গোলাপ গ্রাম থেকে বিরুলিয়া -১০০

বিরুলিয়া থেকে স্লুইচগেইট -২০×২=৪০

রিক্সায় ১১ নম্বার -২০

অখান থেকে রাইদায় ক্ষিলখেত -১৫×২=৩০

খাবারঃ-

মটকা চা -৪০×২=৮০

ঝালমুরি ৪০ 


মোট খরচ - ৪৮০

একজন - ৪৮০÷২= ২৪০ টাকা


অনুরোধঃ-

কোথাও গেলে অবশ্যই পরিবেশের দিকে খেয়াল রাখবেন।যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না। যথাসম্ভব প্লাস্টিকের ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। আপনার আচার আচরণ যাতে কারো বিরক্তির কারণ না হয়।



Comments